নেয়ামত উল্যাহ তারিফ, সুবর্নচর প্রতিনিধিঃ
চর্যাপদ বাংলা হলে, চর্যাপদ থেকে মধ্যযুগ পর্যন্ত আমাদের সাহিত্য মানেই পদ্ম সাহিত্য। অর্থাৎ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস মূলত বাংলা কবিতার ইতিহাস। চর্যাপদ বা মধ্যযুগের কাহিনী নির্ভর অনুবাদ বাংলা কাব্য সাধারণ মানুষের সাহিত্য হিসাবে আর ভূমিকা রাখছে না। এখন সাধারণ মানুষের পঠিত কবিতা মানেই আধুনিক কবিতা। বর্তমান আধুনিক কবিদের মধ্যে মৌ মধুবন্তী কবিতায় মেধার স্বাক্ষর রাখছেন। তিনি কবিতায় সমকালীন চিত্র অঙ্কন করেন। ‘জীবনশেখা’ তেমনি তার একটি কবিতা। আজ কবির ‘জীবনশেখা’ কবিতাখানি নিয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করবো।
কবিতা মানুষকে সভ্যতার পথ দেখায় এবং সুস্থ-সুন্দর সমাজ গঠন করতে সহায়তা করে। আধুনিক সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য মানববাদী চিন্তার প্রকাশ। মানুষের কথা বলতে গিয়ে আধুনিক যুগের কবিগণ, সাহিত্যিকগণ, শিল্পীগণ মানুষের দেশকাল, সামাজিক পরিবেশ প্রতিবেদনকে যথাযোগ্য ভূমিকায় স্থাপন করেছেন। যেমন কবি মৌ মধুবন্তী লিখেন- ‘আমি লিখতে লিখতে জীবনটাকে শিখি।/ জীবনটা যেন ফেন্সিডিলের শিশি’। কিংবা ‘আমি চাই জীবন জানুক আমাকে/ আমি জানি জীবনের গুঢ় তথ্য/ জীবন মানেই কি শ্বাস- প্রশ্বাস সত্য?’
গ্রিক কবি ও দার্শনিক অ্যারিস্টটল বলেছেন, ‘কবিতা দর্শনের চেয়ে বেশি, ইতিহাসের চেয়ে বড়।’ এরিস্টটল যথার্থই বলেছেন। কবি মৌ মধুবন্তী এর কবিতাতে তেমন চিত্র শব্দে শব্দে ফুটে ওঠে। যেমন- ‘জীবন বলতে চলার পথে হোঁচট খেয়ে শেখা/ জীবন মানে মাটিতে দাঁড়িয়ে উদার আকাশ দেখা’
বর্তমান সময়ে সাহিত্য জগতে শিল্প-সংস্কৃতিতে কবি ও কবিতার শ্রেষ্ঠত্ব বেড়েই চলেছে। আমরা এ প্রতিদ্বন্দ্বীতাকে স্বাগত জানাই। বর্তমান কবিতায় নাগরিক-হতাশা যুক্ত হয়েছে, মানবতাবোধ জাগ্রত হয়েছে। কবি মৌ মধুবন্তী লিখেন- ‘জীবন মানে জমিয়ে নেয়া আধুনিক শহুরে হাওয়া/ আমি সব কিছু চাই, কিছুতে নেশা নাই/ ফ্যান্সিডিলের শিশিতেও আমি কবিতার শব্দ পাই।/ আমরণ আমার বাংলাকে ভালোবেসে যাই।’ আধুনিক কবিতায় দেশ প্রেমও তীব্র। ফলে, আধুনিক কবিতা সার্থক হয়েছে।



















